সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৮:৩০ পূর্বাহ্ন
ভিশন বাংলা ডেস্কঃ গত ০৮/০১/১৯ খ্রিঃ তারিখে মোঃ জুয়েল আহম্মেদ (২২), পিতা- মোঃ আঃ রহমান, সাং- লক্ষিপুর, থানা-গুরুদাসপুর, জেলা-নাটোরকে অপহরণ ও মুক্তিপন দাবী সংক্রান্ত একটি অভিযোগ অধিনায়ক, র্যাব-২, শেরেবাংলা নগর, ঢাকার বরাবরে আসে। অভিযোগে জানা যায় ভিমটিম মোঃ জুয়েল আহম্মেদ (২২) কিছু দিন আগে ডিএমপি ঢাকা তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল এলকায় ষ্টান্ডার্ড গ্রুপ, ঢাকায় চাকুরী করতো। চাকুরী করার সুবাদে মোঃ আবু মুসা @ প্রিন্স আল মুসা এর সাথে পরিচয় হয় এবং তার সাথে বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। তাদের বন্ধুত্বের এক পর্যায়ে মোঃ আবু মুসা @ প্রিন্স আল মুসা এর অপর বন্ধু মোঃ কুরবার আলী এর সাথে তার পরিচয় হয়। এর কিছুদিন পর জুয়েল আহম্মেদ উক্ত চাকুরী ছেড়ে নিজ গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। দীর্ঘদিন বন্ধুত্বের পরিচয়ে মোঃ আবু মুসা @ প্রিন্স মুসা তার বন্ধু মোঃ জুয়েল আহম্মেদ’কে ঢাকা বিমান বন্দরে কাষ্টমস্’এ চাকুরী দেয়ার প্রলোভন দেখায়। তার প্রলোভনে জুয়েল আহম্মেদ চাকুরী করতে রাজী হয়ে যায়। এর কিছুদিন পর (মোঃ আবু মুসা @ প্রিন্স আল মুসা) (মোঃ জুয়েল আহম্মেদ) এর স্থায়ী ঠিকানায় একটি ভূয়া নিয়োগপত্র ডাক মারফতে প্রেরণ করেন এবং মোবাইল ফোন করে তাকে ঢাকায় আসতে বলেন। তার কথা মতো মোঃ জুয়েল আহম্মেদ ঢাকায় আসেন। সেখান থেকে তাকে ভূলিয়ে মোঃ কুরবান আলী নিজের বাসায় আটকে রেখে মারধর করা শুরু করে এবং মুক্তিপণের টাকা দাবী করে। সে টাকা কোথায় পাবো বলে অনুনয়-বিনয় করলে তখন অপহরণকারীরা প্রথমে তার হাত, পা ও চোখ বেধে চর, ঘুষি মারতে থাকে এবং পরবর্তীতে হাতুড়ি, মোটা ইলেকট্রিক তার ইত্যাদি দিয়ে টর্চারিং করতে থাকে। তখন সে নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে পরিবারের কাছে টাকা পাঠানোর কথা বলে। তারা জুয়েল আহম্মেদের মুক্তিপনের জন্য ৪,০০,০০০/- টাকা দাবি করে। তারা আরো বলে তাদের চাহিদামতো টাকা দিলে জুয়েল’কে মুক্তি দেয়া হবে অন্যথায় তাকে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। অপহরণকারীদের সাথে মুক্তিপনের দেন দরবার ও এ সংক্রান্ত কোন কুল কিনারা না পেয়ে অভিযোগকারী র্যাব-২ অফিসে অভিযোগ দালিখ করেন।
র্যাব-২ অভিযোগ প্রাপ্ত হয়ে ভিকটিমকে উদ্ধারের নিমিত্তে সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা দিয়ে সম্ভাব্য বিভিন্ন স্থানে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রাখে এবং মোঃ কুরবান আলী এর ব্যবহৃত নাম্বারে যোগাযোগ করে তাকে মুক্তিপনের টাকা প্রদানের আশ্বাস দিলে মোঃ কুরবান আলী কর্তৃক প্রদত্ত মোবাইলের বিকাশ নাম্বার প্রদান প্রদান করেন। বিভিন্ন সময়ে ২০,০০০/- টাকা প্রদান করা হয়। উদ্ধার কার্যক্রমের অংশ হিসেবে গোয়েন্দা নজরদারীর ভিত্তিতে র্যাব-২ এর একটি আভিযানিক দল ভিকটিমকে উদ্ধারের নিমিত্তে ফাঁদ পাতে। সে মোতাবেক গত ০৮/০১/১৯ খ্রিঃ তারিখ আনুমানিক ১৭.৪৫ ঘটিকায় র্যাব-২ এর আভিযানিক দল উক্ত স্থানে পৌঁছে সু-কৌশলে অপহরণকারী মোঃ কুরবান আলী’কে আটক করা করে। আটককৃত আসামীর দেয়া তথ্য মতে ভিকটিম মোঃ জুয়েল আহম্মেদকে উদ্ধার করে র্যাব হেফাজতে নেয়া হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামী ভিকটিম মোঃ জুয়েল আহম্মেদকে অপহরণ করে আটক রেখে মুক্তিপনের টাকা দাবীর কথা স্বীকার করে। আসামী মোঃ কুরবান আলী @ পথিক স্বীকার করে যে, সে এবং অপর পালাতক আসামী মোঃ আবু মুসা @ প্রিন্স আল মুসা পরস্পর যোগসাজোসে (মোঃ জুয়েল আহম্মেদ) কে ডিএমপি ঢাকার ফার্মগেইট হলিক্রস স্কুলের সামনে থেকে জোরপূর্বক অপহরণ করে বাসায় কক্ষে আটক করে রাখে। ভিকটিম জুয়েল কে মারধর করে তার পরিবারের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা দাবি ও নগদ ১৯,৮০০/- (উনিশ হাজার আট শত) টাকা বিকাশের মাধ্যমে নেওয়ার কথা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন।